ভাব সম্প্রসারণ: সেই ধন্য নরকুলে লোকে যারে নাহি ভুলে

সেই ধন্য নরকুলে লোকে যারে নাহি ভুলে ।

অথবা ,
বেঁচেও মরে যদি মানুষ দোষে ,
মরেও বাঁচে যদি মানুষ ঘোষে ।

মূলভাব : সদাচরণ ও সৎকর্ম দ্বারা মানুষ যদি অন্যের অন্তরে স্থান করে নিতে পারে তবে তার জন্ম সার্থক । মরেও তখন অমরত্ব লাভ করা যায় । আবার অসৎ কর্মের ফলে মানুষ জীবিত থেকেও নিরর্থক জীবনের দুঃসহ গ্লানি ভোগ করে ।

সম্প্রসারিত ভাব : মানবজীবনে সুন্দর - অসুন্দর , ভালোমন্দ সবকিছু পাশাপাশিই থাকে । মানুষ কী গ্রহণ ও কীসের পরিচর্যা করবে তার ওপরই নির্ভর করে জীবনের সাফল্য - ব্যর্থতা । মানুষের জীবন সীমিত সময়ের পরিধিতে বাঁধা । ছোট্ট এ জীবনে মানুষ যদি সৎকর্ম ও সৃজনশীলতার পরিচর্যায় আত্মনিবেদিত থাকে তবেই তার জীবন হয়ে ওঠে অর্থবহ । সমাজে বসবাস করতে গিয়ে স্বার্থপরতাকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের কল্যাণ , সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখা প্রভৃতি কাজের মধ্যদিয়ে যে কেউ মানুষের প্রশংসা কুড়াতে পারে । এ ধরনের সৎকর্মশীল মানুষ মরেও মানুষের মন থেকে হারিয়ে যায় না । বরং যুগ যুগ ধরে মানবসমাজে শ্রদ্ধার সাথে স্মরিত হয়ে থাকে । এঁরা মর্যাদা পায় ক্ষণজন্মার , অমরত্বের । মানুষের মুখে মুখে ঘোষিত হয় এদের কীর্তিগাথা , প্রশংসার উচ্চারণ । অপরদিকে যারা স্বার্থপর , যাদের দ্বারা সমাজ ও মানবতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের জীবন একেবারেই বৃথা । জীবিতাবস্থায়ই এরা ব্যর্থতার গ্লানি ভোগ করে । সমাজের অন্যান্য মানুষ এদের ঘৃণা করে এবং অবজ্ঞায় মুখ ফিরিয়ে নেয় । তাদের জীবন মৃত্যুরই নামান্তর । তাই এরা প্রকৃত অর্থে বেঁচে থেকেও মৃত । অন্যের মুখের সামনেই এদের নিন্দা করে , দোষ প্রচার করে । নিন্দনীয় জীবনের চেয়ে মৃত্যু অনেক শ্রেয় । তাই ক্ষুদ্র এ জীবনে আমাদের সবারই সৎকর্মশীল হবার সাধনা করা উচিত ।

মন্তব্য : সৎকর্মের মাধ্যমে মানুষ যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকে পৃথিবীতে । পৃথিবীর মানুষ তাদেরকে স্বরণ করে শ্রদ্ধার সাথে । অপরদিকে মানুষ তার অসৎ কর্মের জন্য জগতে ঘৃণিত হয় । তাদের কেউ মনে রাখে না ।

ভিডিও দেখুন



আরো পড়ুন: