ভাব সম্প্রসারণ : পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়

পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়

মূলভাব : প্রতিটি মানুষই নিষ্পাপ হয়ে পৃথিবীতে আসে । জন্মের সময় কোনো মানব শিশুর গায়ে পাপ পঙ্কিলতার চিহ্ন থাকে না । অর্থাৎ, মানুষ জন্মসূত্রে পাপী হয় না ; বরং পরিবেশ তাকে ক্রমে ক্রমে পাপীতে রূপান্তরিত করে ।

সম্প্রসারিত ভাব : বিংশ শতাব্দীর এ সভ্যতার যুগে ক্রমেই বাড়ছে খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণের মতো অনৈতিক এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা । কেউ লোভে পড়ে, কেউ জীবিকার তাগিদে আর কেউ বা সঙ্গদোষে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে । সমাজের কুচক্রীমহল বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অন্যায় কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত নিযুক্ত করছে । এভাবেই ধীরে ধীরে একজন মানুষ হয়ে উঠছে দাগী আসামি কিংবা অপরাধী । কিন্তু তার জন্মের সময় সে আর দশজনের মতোই নিষ্পাপ ছিল । পৃথিবীর বুকে বেড়ে উঠতে গিয়ে নানা পরিবেশের সংস্পর্শেই মানুষ পাপাচারে প্রবৃত্ত হয় । স্বেচ্ছায় কেউ পাপী হয় না । বৈরী পরিবেশ, অসৎ সঙ্গ, জীবিকার তাগিদ কিংবা অন্য কোনো কারণেই মানুষ পাপ পথ বেছে নিতে বাধ্য হয় । মানুষের ইন্দ্রিয় সংযত না থাকলেই মানুষ পাপ - পুণ্যের ব্যবধান করতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে । মানুষ হিসেবে প্রত্যেককেই অন্যের প্রতি সহানুভব, শীতিল থাকতে হবে । পাপ কর্মকে ঘৃণা করা প্রতিটি মানুষের পরম কর্তব্য ও পবিত্র দায়িত্ব । কিন্তু যে পাপী তাকে সমাজের এককোণে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া মহৎপ্রাণ মানুষের কাজ নয় । তারাও মানুষ এবং আমাদের বৃহত্তর সমাজেরই অংশ। তাই তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করা অবিবেচকের কাজ । তাদেরকে ভালোবাসা দিয়ে তাদের স্বভাবের পরিবর্তন ঘটাতে হবে । তবেই সমাজে হবে চির কল্যাণ ও মঙ্গলের জয়যাত্রা ।

মন্তব্য : সমাজে নানা ধরনের মানুষ বাস করে । সবাইকে নিয়েই গঠিত হয় সমাজ । এদের মধ্যে যারা পাপকর্মে প্রবৃত্ত হয় তাদের কর্মকে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে । তবে মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে পাপীকে সংশোধন করার । পাপকে ঘৃণা করলেও পাপীকে ঘৃণা করা উচিত নয় ।

ভিডিও দেখুন



আরো পড়ুন: