অপসংস্কৃতি অনুচ্ছেদ [সকল শ্রেণীর জন্য]

অপসংস্কৃতি

সমগ্র জাতির চিন্তাধারা, ভাবধারা ও কর্মধারার গৌরবময় প্রতিচ্ছবিই হল তার সংস্কৃতি। মানবীয় আচার-পদ্ধতি, শিক্ষা-দীক্ষা, মানসিক উন্নতি, পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব- এ সবের সমন্বয়ে সৃষ্ট এক অপূর্ব জীবনধারাই হচ্ছে ‘সংস্কৃতি’। সংস্কৃতির মূল কথা হল নিজেকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে গড়ে তোলা এবং অপরের নিকট নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা।

প্রেম ও সৌন্দর্য সংস্কৃতির প্রধান আশ্রয়। এ আশ্রয় থেকে বিচ্যুত হলে সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যায় এবং মানুষ অপসংস্কৃতির দিকে ধাবিত হয়। শিক্ষা ও সভ্যতার অবনতি ঘটিয়ে যে সংস্কৃতি মানুষকে সুন্দর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তাই অপসংস্কৃতি। সংস্কৃতির বিপরীত হল অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতি জাতির এক মানসিক ব্যাধি। অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্য বিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। বর্তমানে আমাদের দেশে সংস্কৃতির অবক্ষয় বা অপসংস্কৃতি দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে আমাদের দেশে অপসংস্কৃতি দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সৎকার্য ও সৎচিন্তার মধ্য দিয়ে প্রকৃত ধর্মকার্য আজ অনুপস্থিত, ধর্মের নামে লোক-দেখানো কিছু আচার-অনুষ্ঠানের প্রাধান্য লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষকে বড় করে তুলেছে। এছাড়া, শিক্ষার নামে কুশিক্ষা, সমাজসেবার নামে দলাদলি, সঙ্গীতের নামে সঙ্গীতহীন কতক হৈচৈ এবং বেশভূষার নামে হাস্যকর কিছু অনুকৃতি সাংস্কৃতিক জীবনে গ্লানি ও মিথ্যাচারকে পুঞ্জীভূত করছে। বিদেশি সংস্কৃতিকে আমরা একবাক্যে অপসংস্কৃতি বলে আখ্যায়িত করে থাকি। আসলে কথাটা সর্বাংশে ঠিক নয়। বিদেশের সবকিছুই আমাদের জন্যে অপসংস্কৃতি, তা নয়।

তবে বিদেশের কোনো কিছুকে গ্রহণ করার আগে দেখতে হবে তা আমাদের জীবনকে সুন্দর বা উন্নত করছে কিনা, আমাদের চেতনাকে উদার কিংবা মহান করছে কিনা। যা আমাদের জীবনবোধকে পরিশীলিত করে তা অপসংস্কৃতি নয়। কিন্তু আমরা যদি ডিসকো গান, নাচ, পাশ্চাত্য মডেলের পোশাকের মোহে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি তা হলে সেটা স্বাভাবিকভাবেই অপসংস্কৃতি হবে।সংস্কৃতি চর্চার বিভিন্ন দিক রয়েছে, মূল্যবোধের দৃষ্টিতে যারা সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে তাদের কাছেই তা হয়ে ওঠে প্রেম ও সৌন্দর্যের প্রতীক।

ভিডিও দেখুন


আরো পড়ুন: