প্রবাদ - প্রবচন কাকে বলে? প্রবাদ প্রবচন দিয়ে বাক্য রচনা।
প্রবাদ - প্রবচন
মানুষ সামাজিক জীব । সমাজে জীবনযাপন করতে বিভিন্নজন বিভিন্ন ব্যক্তির ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় । এর মধ্য দিয়ে সঞ্চিত হয় অভিজ্ঞতা । সে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বা তাৎক্ষণিক অনুভূতি যখন সীমিত পরিসরের বাক্যে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে প্রবচন বলা হয় । প্রবচন যখন ভাষায় স্থায়ীভাবে ব্যবহৃত হয় , তখন তাকে প্রবাদ বলে । প্রাজ্ঞ ব্যক্তির তাৎপর্যপূর্ণ উক্তিই প্রবচন । অনেক সময় প্রবচনটির স্রষ্টার নাম বিস্মৃত হয় , কিন্তু প্রবচনটির তাৎপর্য টিকে থাকে । সে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির উক্তিটি তখন প্রবাদে পরিণত হয় । প্রবাদ ও প্রবচনের মধ্যে এ সূক্ষ্ম পার্থক্য থাকলেও শব্দ দুটি একই অর্থ বহন করে । মূলত প্রবাদ হলাে লােকপরস্পরগত বিশেষ উক্তি বা কথন ।
অভিজ্ঞতালব্ধ কোনাে গভীর জীবনসত্য লােকপ্রিয় কোনাে উক্তির মধ্যে সংহত হয়ে প্রকাশিত হলে তাকে প্রবাদ-প্রবচন বলে। অর্থাৎ বিস্তৃততম জীবন অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ততম সাহিত্যিক প্রয়াসই হলাে প্রবাদ - প্রবচন।
পরিবেশ , কৃষিশিল্প , খাদ্যাভ্যাস , ঋতুপর্ব , বিয়ে - শাদী , আচার - অনুষ্ঠান , পরিবার , ধর্ম , মানবচরিত্র , প্রেম - ভালােবাসা , নারী - পুরুষ সম্পর্ক ছাড়াও নানা উৎস থেকে প্রবাদ - প্রবচনের সৃষ্টি । প্রবাদের মধ্যে থাকে নীতিকথা উপদেশ ; কখনও কখনও তা হয় হাস্যরসমিশ্রিত । প্রবাদ হয়ে ওঠে ব্যক্তি ও সমাজের কর্তব্য নির্দেশক এবং কৃতকর্মের রূঢ় সমালােচক । সর্বজনগ্রাহ্যতা প্রবাদের একটি বিশেষ গুণ । প্রবাদ বাক্যের অর্থটি অনেক সময় আক্ষরিক বা প্রচলিত হয় না , তার ভেতর দিয়ে একটি ব্যার্থ বা বিশেষ অভিলাষিত অর্থ প্রকাশ করা হয় ।
প্রবাদ - প্রবচন ভাষার প্রকাশ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে । অনেক কথা বলে যেটা বােঝাতে হতাে , একটি প্রবাদের ব্যবহারে সে উদ্দেশ্য সাধিত হয় । ভাষা হয় তীক্ষ , প্রাণবন্ত এবং লক্ষ্যাভিসারী । প্রবাদ একদিকে যেমন জন - জাতি - নৃগােষ্ঠীর দর্পণ , অন্যদিকে তা বর্তমান পরিস্থিতিকে সকৌতুক প্রকাশেরও বলিষ্ঠ হাতিয়ার ।
এখানে কিছু প্রবাদ - প্রবচনের দৃষ্টান্ত দেয়া হলাে :
অভাবে স্বভাব নষ্ট ( অভাবের কুপ্রভাব ) : অভাবের তাড়নায় মানুষ কুপথে পা বাড়ায় অর্থাৎ সৎ লােকও অসৎ হতে বাধ্য হয় ।
অতি চালাকের গলায় দড়ি ( বেশি চালাকি করলে বিপদে পড়তে হয় ) : বিনা টিকেটে ট্রেন চড়তে গিয়ে ধরা পড়ে গেল সুবহান , অতি চালাকের গলায় দড়ি !
অতি লােভে তাঁতি নষ্ট ( বেশি লােভে সৰ্বৰ্ষ খােয়ানাে ) : বেতন ভালােই ছিল , ঘুষ খেয়ে ধরা পড়ে চাকরিটাই গেল অতি লােভে তাঁতি নষ্ট !
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ ( বেশি বেশি রকম ভক্তি - শ্রদ্ধায় সন্দেহের সৃষ্টি হয় ) : হঠাৎ বড় সাহেবের প্রতি বাকু মিয়া এত বিনয় প্রকাশ করছে কেন জানাে তাে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ ।
অভাগা যেদিকে চায় , সাগর শুকিয়ে যায় ( ভাগ্য যার খারাপ , কোনাে দিকেই সে আশা দেখতে পায় না ) ; আকরাম ভাই একটা চাকরিও পেলেন না , ব্যবসায় শুরুর প্রথম দিনে দোকানে ডাকাতি । আসলে অভাগা যেদিকে চায় , সাগর শুকিয়ে যায় ।
অল্প শােকে কাতর , অধিক শােকে পাথর ( বেশি দুঃখে স্তন্ধ হওয়া ) ; স্বর্ণের দোকান থেকে পাঁচ শ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়ে যাবার পর জয়ন্ত একেবারেই ভেঙে পড়েছে । কথায় বলে , অল্প শােকে কাতর অধিক শােকে পাথর ।
ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় ( আঘাত করলে প্রত্যাঘাত পেতে হয় ) : আজ একা পেয়ে সাবেরকে দু ঘা বসিয়ে দিলে , কাল বাগে পেলে ও তােমাকে চার ঘা বসিয়ে দেবে । মনে রেখাে , ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় ।
একে নাচনি বুড়ি , তাতে পড়েছে ঢােলের বাড়ি ( ইন্ধন জোগানাে ) : পরীক্ষার ফল ভালাে হয় নি বলে বাবা এমনিতেই রেগে আছেন , কে যেন তাকে বলেছে আমি ক্লাবে নাটক করছি , আর যায় কোথায় একে নাচনি বুড়ি , তাতে পড়েছে ঢােলের বাড়ি ।
এক কড়ার মুরদ নাই ভাত মারার গোঁসাই ( আয় করে না অথচ খরচ করে প্রচুর ) : আমার কাকার ছেলে দুটো একে তাে গবেট তার ওপর সন্ত্রাসী , এক কড়ার মুরদ নাই ভাত মারার গোঁসাই।
এক মাঘে শীত যায় না ( বিপদ , ঝামেলা বারবার ফিরে আসে ; জব্দ করার সুযােগ বারবার আসে ) : তােমার প্রয়ােজন মনে হচ্ছে যে শেষ ; দেখা হলেও মাথা ঘুরিয়ে চলে যাও —মনে রেখাে , এক মাঘে শীত যায় না ।
কারও পৌষ মাস , কারও সর্বনাশ ( কারও সুসময় কারও দুঃসময় ; একের লাভে অন্যের ক্ষতি ) : চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা মজুদ বাড়াচ্ছে আর সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ছে । একেই বলে কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ ।
কেউ মরে বিল ঘেঁচে , কেউ খায় কৈ ( একের পরিশ্রম অন্যের বিলাসিতা ) : গার্মেন্টস শ্রমিকেরা দিন - রাত কাজ করার পরও ভালাে বেতন পায় না , অন্যদিকে মালিকের পােয়া বারাে অবস্থা । একেই বলে কেউ মরে বিল ঘেঁচে , কেউ খায় কৈ ।
কয়লা যায় না ধুলে , স্বভাব যায় না মলে ( খারাপ লােক সহজে তার স্বভাব পরিবর্তন করতে পারে না ) : রাকিবুল শিক্ষিত হলে কী হবে এখনও আগের মতাে গোঁয়ার রয়ে গেছে , কয়লা যায় না ধুলে , স্বভাব যায় না মরলে ।
কুমিরের সাথে বিবাদ করে জলে বাস ( যার সেখানে কর্তৃত্ব , তার সঙ্গে সেখানে বিবাদ করা ঠিক নয় ) : আমার অফিসে বড়কর্তা অনিয়ম আর দুর্নীতি ছাড়া যেন কিছুই বােঝেন না , কোনাে প্রতিবাদও করতে পারি না । কথায় আছে – কুমিরের সাথে বিবাদ করে জলে বাস ।
গেঁয়াে যােগি ভিখ পায় না ( নিজের দেশের লােকের কাছে আদর না পাওয়া ) : মাসুম এত ভালাে সংগীতশিল্পী অথচ এলাকায় কোনাে কদর নেই – গেঁয়াে যােগি ভিখ পায় না ।
গাইতে গাইতে গায়েন , বাজাতে বাজাতে বায়েন ( অধ্যবসায়ের ফলে দক্ষতা আসে ) : মামুন বেশি করে প্র্যাকটিস করাে ; ক্রিকেট ছেড়াে না । জানাে না – গাইতে গাইতে গায়েন , বাজাতে বাজাতে বায়েন ।
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল ( কার্যারম্ভের পূর্বে ফল ভােগের উচ্চাশা এবং প্রস্তুতি ) : ব্যবসা শুরু না করতেই লাভের হিসাব নিকাশ করছ – গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল ছাড়া !
ঘরের শত্রু বিভীষণ ( শত্রু যে আপনজন ) : আমার দলের কিছু লােক আমার বিরুদ্ধে ভােট দিয়েছে । এই ঘরের বিভীষণদের জন্যেই আমি হেরেছি ।
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা ( সবার আগে নিজের নিরাপত্তা ) : আগে নিজের বিপদ সামলাই , পরে তােমারটা চিন্তা করব । কথায় বলে না— চাচা আপন প্রাণ বাঁচান ।
চেনা বামুনের পৈতা লাগে না ( যােগ্য লােকের জন্যে সুপারিশ প্রয়ােজন হয় না ; পরিচিত ব্যক্তিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দরকার পড়ে না ) : তুমি ড . রাজীব পালের কথা বলছ ? উনাকে চেনে না কে ? চেনা বামুনের পৈতা লাগে না ।
চকচক করলেই সােনা হয় না ( বাইরের চটকদারিতে আসল পরিচয় ফুটে ওঠে না ) : অমায়িক আচরণ আর আন্তরিকতা দেখে মনে হয় অসীম খুবই ভালাে । সত্যি বলতে কী , চকচক করলেই সােনা হয় না ।
চোরে না শােনে ধর্মের কাহিনি ( উপদেশ দিয়ে অসৎকে সৎ করা যায় না ) : দাগি চোরকে বারবার বলেছ চুরি করা মহাপাপ ; ও আবার ধরা পড়েছে । চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি ।
চোরের মায়ের বড় গলা ( অতিমাত্রায় অসৎ ব্যক্তির অতিরিক্ত সাধুতার ভাব ; নিজে অসৎ তা ভালােভাবে জেনেও অন্যের ওপর চোটপাট ) : নিজে অবৈধ টাকা আয় করে অন্যের আয়ের সমালােচনা করছ , এ যে দেখি চোরের মার বড় গলা ।
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে ( যার যা স্বভাব তা মরলেও ছাড়তে পারে না ) : ঢাকা থেকে চুয়াডাংগায় বেড়াতে গিয়ে ড . রামকৃষ্ণ বিশ্বাসকে রােগী দেখতে হয়েছে । কথায় বলে না – চেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে ।
দশে মিলি করি কাজ , হারি জিতি নাহি লাজ ( সবাই মিলেমিশে কাজ করলে সফলতা আসে ) : চলাে , সবাই মিলে এ কাজাটাতে হাত লাগাই , দশে মিলি করি কাজ , হারি জিতি নাহি লাজ ।
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে ( পাপ গােপন থাকে না ; আল্লাহর বিচার কখনও এড়ানাে যায় না ) : এসব প্রভাবশালী লােকদের কারাভােগই প্রমাণ করে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে ।
ধর্মের ঢাক আপনি বাজে ( পাপ গােপন না থাকা ) : গ্রামের মাতব্বরের ঘুষ খাওয়ার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর সবাই বলাবলি করছে , ধর্মের ঢাক আপনি বাজে ।
ধান ভানতে শিবের গীত ( অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা ) ; রুনার কাছ থেকে কিছু জানতে চাওয়াই বৃথা , ধান ভানতে শিবের গীত গাওয়াই ওর স্বভাব ।
ধরি মাছ না ছুঁই পানি ( গা বাঁচিয়ে উদ্দেশ্য সিদ্ধি করা ; ঝুঁকি বা দায়িত্ব এড়িয়ে কর্তব্য করা ) : রনি কজের ব্যাপারে খুবই সাবধান , ধরি মাছ না ছুই পানি নীতি নিয়েই তাে এত টাকা - পয়সা কামিয়েছে !
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালাে ( একেবারে কিছু না থাকার চেয়ে অকিঞ্চিৎকর কিছু থাকা ভালাে ) : অল্প বেতন পেলেও চাকরিটা করাে , নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালাে ।
নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা ( অক্ষমতা ঢাকার জন্যে বাজে অজুহাত ) : নিজের অক্ষমতা স্বীকার করাে , নাচতে জানলে উঠোন বাঁকা বলে লাভ নেই ।
নুন খাই যার গুণ গাই তার ( উপকারীর উপকার করা ) : আমার আর্থিক কষ্টের দিনে আজাদ অনেক সাহায্য করেছে । আজ ওর বিপদে দাড়াব , নুন খাই যার গুণ গাই তার ।
নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায় ( বিপদে সবার ক্ষতি ) : পরিবারের সমস্যা দেখে চুপ করে থেকো না , নগর পুড়িয়ে দেবালয় কী এড়ায় ?
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায় ( অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ অকাজেই খরচ হয় ) : চোরাকারবারির টাকা শেষ পর্যন্ত পুলিশকে দিতে হলাে— একেই বলে পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায় ।
পেটে খেলে পিঠে সয় ( লাভের সম্ভাবনা থাকলে কষ্ট সহ্য করা যায় ) : টাকা পেলে এক মাইল কেন , দশ মাইল দূরে যেতেও রাজি আছি , জানােই তাে পেটে খেলে পিঠে সয় ।
বিনা মেঘে বজ্রপাত ( অপ্রত্যাশিত দুঃসংবাদ ) : এমন খুশির দিনে দুর্ঘটনার সংবাদ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত ।
বাঁদরের গলায় মুক্তোর হার ( যে ভালাে জিনিসের কদর বা দাম বােঝে না তাকে ভালাে বা দামি জিনিস দেওয়া ) ; এ অশিক্ষিত মূর্খটাকে এত বড় চাকরি দিলে এ যেন বানরের গলায় মুক্তোর হার ।
ভূতের মুখে রাম নাম ( স্বভাব বিরুদ্ধ কথা বা বাক্য অসম্ভব ব্যাপার ) : ঘুষখাের তহসিলদার বলছে ন্যায়নীতির কথা— ভূতের মুখে রাম নাম !
মায়ের কাছে মামাবাড়ির গল্প ( জানা লােকের কাছে গল্প বলে লাভ নেই ) : ছােট মামার কাছে আমার বিষয়ে কথা বলা মানে হলাে মায়ের কাছে মামাবাড়ির গল্প বলা ।
যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা ( অপছন্দের লােকের খুঁত না থাকলেও খুঁত ধরি ) : তুমি তাে শুভর প্রশংসা শুনতেই পার না- যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা ।
যস্মিন দেশে যদাচার ( যে দেশে যে নিয়ম ) : কোনাে কোনাে জনগােষ্ঠীতে বরই কনের বাড়িতে এসে বসবাস করে , এটাই তাদের নিয়ম— যস্মিন দেশে যদাচার ।
যেমন কর্ম তেমন ফল ( অপরকে জব্দ করতে চাইলে নিজেই জব্দ হতে হয় ) : ফরিদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে প্রতিবেশী কামাল পুলিশী তদন্তে ফেঁসে গেছে— যেমন কর্ম তেমন ফল ।
যত গর্জে তত বর্ষে না ( আড়ম্বর অনুযায়ী কাজ না হওয়া ) : এসব কথা শুনে আহলাদিত হয়াে না , যত গর্জে তত বর্ষে না ।
যে যায় লঙ্কায় , সে - ই হয় রাবণ ( ক্ষমতা লাভ করলে সবাই একরকম হয় ) : আমাদের দেশে যে কেউ ক্ষমতা পেলেই দুনীতিপরায়ণ হয়ে ওঠে , যে যায় লঙ্কায় , সে - ই হয় রাবণ ।
লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় ( একদিকে যেমন লাভ হয় , অন্যদিকে তেমনি ক্ষতি হয় ) : ব্যবসায় করে যা একই লাভ হলাে , সব এখন চিকিৎসার জন্যে খরচ করতে হচ্ছে , লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় ।
লঘু পাপে গুরুদণ্ড ( অপরাধের তুলনায় অধিক সাজা ) : পরীক্ষার হলে একটু পেছনে তাকানােয় সুখদেবকে বহিষ্কার করা হলাে , লঘু পাপে গুরুদণ্ড বেচারা পেল ।
লক্ষ্মীর পুত ভিক্ষা মাগে ( ধনী লােকের অর্থ চাওয়া ) : আপনার কত টাকা তারপরও আপনি আমার মতাে গরিব মানুষের কাছে অর্থ সাহায্য চাচ্ছেন , এরই নাম লক্ষ্মীর পুতের ভিক্ষা মাগা ।
শক্তের ভক্ত নরমের যম ( প্রবলের নিকট বিনীত এবং দুর্বলের নিকট বিক্ৰম প্রকাশ করে এমন ব্যক্তি ) : দুষ্ট ও গোঁয়ার লােককে কঠোর হাতে দমন করতে হয় , এরা শক্তের ভক্ত নরমের যম ।
সুখে থাকতে ভূতে কিলায় ( সুখের মর্যাদা না বুঝে স্বেচ্ছায় দুঃখ বরণ করা ) : এত ভালাে চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে নাজমা এখন বেকারত্বের মজা টের পাচ্ছে— সুখে থাকতে ভূতে কিলায় আর কি !
সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দিব কোথা ( সর্বত্র গলদ থাকলে দূর করা যায় না ) : প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে অনিয়ম আর দুর্নীতির অবস্থা এমন যে সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দিব কোথা ।
সােজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে না ( জটিল কাজ সম্পাদনে কূটকৌশলের প্রয়ােজন হয় ) : দিলশাদের মতাে ধুরন্ধর লােককে কিছুতেই এভাবে দোষ স্বীকার করাতে পারবে না , সােজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না !
সময়ের এক ফোড় অসময়ের দশ ফোঁড় ( সময় থাকতে সমাধান হওয়া ) : দেরি না করে সময়ের কাজ সময়ে করাে , সময়ের এক ফোড় অসময়ের দশ ফোঁড় ।
হাতিঘােড়া গেল তল , মশা বলে কত জল ( বিজ্ঞরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে নির্বোধের নাক গলানাে ) : পাড়ার মাথারা যেখানে শফিকদের ভাইয়ে ভাইয়ের বিরােধ মিটাতে পারে না সেখানে মনােয়ার একা কী করবে ? হাতিঘােড়া গেল তল , মশা বলে কত জল ।
হাতে না মেরে ভাতে মারা ( শারীরিক কষ্ট না দিয়ে নাকাল করা ) ; দাঁড়াও না , গায়ে হাত তুলে নয় মামলা দিয়ে সর্বদ্ধান্ত করব । তােমায় হাতে না মেরে ভাতে মারব ।
আরো পড়ুন:
- ধাতু বা ক্রিয়ামূল কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি?
- ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
- বাংলা বানানের নিয়ম বা সহজ বানান পদ্ধতি।
- বচন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের নিবন্ধগুলিতে মন্তব্য করার সময় দয়া করে শ্রদ্ধাশীল এবং গঠনমূলক হন। অনুপযুক্ত, আপত্তিকর, বা অফ-টপিক মন্তব্য মুছে ফেলা হবে। আসুন ABC আইডিয়াল স্কুলের সকল পাঠকদের জন্য একটি ইতিবাচক এবং শিক্ষামূলক পরিবেশ বজায় রাখি। আপনার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ!