ভাবসম্প্রসারণ: ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে , ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে

ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে ,
ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে ।

মূলভাব : ধ্বনিই প্রতিধ্বনির জন্মদাতা এবং ধ্বনির কাছে প্রতিধ্বনি তাই মহাঋণী । অথচ প্রতিধ্বনি তার দীনতা বা ঋণ স্বীকার না করে বরং ধ্বনিকে ব্যঙ্গ করার প্রচেষ্ট চালায় , যাতে তার ঋণ অপ্রকাশ থাকে ।

সম্প্রসারিত ভাব : প্রতিধ্বনি নিজেকে ঋণমুক্ত করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সর্বদা ধ্বনিকে বিদ্রুপ করতে ব্যস্ত থাকে । অথচ ধ্বনি যখন উৎসের দিকেই ফিরে এসে বাজতে থাকে , তখন সেটা হয় প্রতিধ্বনি । তাই প্রতিধ্বনির কোনো আলাদা অস্তিত্ব নেই । অর্থাৎ ধ্বনি আছে বলেই প্রতিধ্বনি বেঁচে আছে । আর এ অকৃতজ্ঞ প্রতিধ্বনির ন্যায় সমাজে অনেক মানুষের আনাগোনা দেখতে পাই যার অপরের অনুগ্রহে সিক্ত হয়ে চরম দুরবস্থায় কোনো রকম স্থিতিশীল হওয়ার সুযোগ পায় । পরবর্তীতে ভাগ্যক্রমে অনুগ্রহকারী উচ্চাসনে সমাসীন হয়ে বা সমমানের হয়ে তার অনুগ্রহকারীর প্রদেয় অনুগ্রহ স্বীকার তো করেই না বরং তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে সদা সচেষ্ট থাকে । দুনিয়ার বহু জাতি আল্লাহর যাবতীয় নিয়ামত প্রতিনিয়ত ভোগ করে চলেছে এবং একইভাবে আল্লাহকে অস্বীকার করছে । এমনকি তার অস্তিত্বহীনতা প্রমাণ করার চেষ্টায় সর্বদা তাদের সময় , শ্রম , মেধা নিয়োজিত এবং তার নিয়ামতকে প্রাকৃতিক বলে মানুষের নিকট উপস্থাপন করছে । অথচ আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তাদের একটা নিঃশ্বাস পর্যন্ত চলতে পারে না । এরা দুনিয়ার ঘৃণ্যতম , আল্লাহর অকৃতজ্ঞ সৃষ্টি । আর তাই মূলকথা হলো যা সত্য তা স্বীকার করে নেয়ার মধ্যে অগৌরবের কিছু নেই বরং অস্বীকার করার মধ্যে রয়েছে সংকীর্ণ মনের পরিচয় ।

মন্তব্য : ঋণ স্বীকার করে নেয়ার মধ্যে অগৌরবের কিছু নেই বরং ঋণ বা উপকারীর উপকার স্বীকার করে নিয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করা উচিত ।