ভাবসম্প্রসারণ: তুমি অধম , তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?

তুমি অধম , তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন ?

মূলভাব : উত্তম ও অধম দু ধরনের মানুষই সমাজে বাস করে । উত্তমের আদর্শ অনুকরণীয় আর অধমের আদর্শ অবশ্যই পরিভাগ । অধমের অন্যায় আচরণের জবাবে অন্যায় আচরণ করা সমীচীন নয় ।

সম্প্রসারিত ভাব : এ সংসারে কেবল ভালো বা মন্দ বলে কিছুই নেই । ভালো ও মন্দ নিয়েই গড়ে উঠেছে এ সংসার । আমাদের সংসারে ভালো লোকের তুলনায় মন্দ লোকের সংখ্যাই বেশি এবং এরা সর্বদাহ অপরের ক্ষতিসাধনে ব্যস্ত । সমাজে , সংসারে এরাই ঘিরে আছে আমাদের চারপাশে । মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধ বিবর্জিত অধম মানুষদের অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকাটা খুবই স্বাভাবিক । কিন্তু তাই বলে এদের সাথে তাল মিলিয়ে আমাকেও মন্দ হতে হবে এমন কোন কথা নেই । ভালো হওয়া বা মন্দ হওয়া মানুষের ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে । অন্যেরা মন্দ হতে পারে , কিন্তু আমার অধিকার আছে ভালো হওয়ার । অধম হওয়ার পথ ভালো হওয়ার পথের চেয়ে সহজ । পক্ষান্তরে , উত্তম হওয়ার পথ কঠিন ।

যারা উত্তম তারা শত বাধাবিঘ্ন সত্ত্বেও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যান । সংসারে যারা উত্তম মানুষ তারা শত লোভ - প্রলোভন উপেক্ষা করে আদর্শ ও নীতিতে অবিচল থাকেন । কখনো কখনো দেখা যায় , কেউ কেউ কোনো একটি অন্যায় কাজকে অন্য একটি অন্যায় দিয়ে রুখতে সচেষ্ট হয় । কিন্তু কোনো হীন বা নীচ ব্যক্তি সমাজবিরোধী ক্ষতিকর কাজ করলেও তার প্রতিবিধান হীন কাজ দিয়ে করা সমীচীন নয় । উত্তম ব্যবহার কিংবা ক্ষমার আদর্শ দিয়ে তার অন্যায়ের সুরাহা করা উচিত । ক্ষমার এই উত্তম আদর্শ যাদের রয়েছে তাঁদের পথ অনুসরণ করে আমাদেরও পরহিতে জীবন উৎসর্গ করা উচিত এবং এটিই হচ্ছে মানুষের মধ্যে উত্তম হবার একমাত্র পথ । কারণ , এ পৃথিবীতে যারা সৎ বা উত্তম তারাই প্রকৃত মানুষ নামের যোগ্য ।

মন্তব্য : মানুষের সাধনা হওয়া উচিত উত্তম হওয়ার সাধনা । কেননা , উত্তম হওয়াই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক ।